নিজস্ব প্রতিবেদক

মিরপুরের আগুনের ঘটনায় নিখোঁজদের খুঁজছেন স্বজনরা। অনেকে দিগবিদিক ছোটাছুটি করছেন হাসপাতাল থেকে ঘটনাস্থলে। কেউ রাস্তায় বসে আহাজারি করছেন, কেউবা প্রিয়জনের ছবি হাতে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। রাত বাড়লেও ঘটনাস্থল ত্যাগ করছেন না কেউ।
ঘটনাস্থলে ছেলে সানোয়ারের ছবি হাতে নিয়ে অপেক্ষায় থাকা মা বলেন, ছেলে সকালে গার্মেন্টসে এসেছিল। আগুন লাগার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
স্বজনের অপেক্ষায় থাকা আরেকজন আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, তার মেয়ে নার্গিস আক্তারের কোনো খবর পাচ্ছেন না। মেয়ের ছবি হাতে আহাজারি করে তিনি বলেন, আর্মি, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস কেউ কিছু বলছে না। ভেতরে কী অবস্থা, মাইয়াডার কিছু হইল কি না, কিছুই জানি না।
অপেক্ষায় থাকা স্বজনরা জানান, আগুন লাগার পর থেকে স্বজনদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না তারা। মোবাইল ফোনেও সাড়া পাচ্ছেন না তারা। নিহতদের নাম পরিচয় এখনও জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, নিহতদের চেনার উপায় নেই। যে ১৬ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে তাদের পুরো শরীর পুড়ে গেছে।
রূপনগর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম মনির সমকালকে বলেন, এখনও আগুনের পুরো এলাকা অনিরাপদ। ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ছাড়া কেউ ভিতরে যেতে পারছেন না। এখনও নিখোঁজের কোনো তথ্য নেই।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চারতলা ভবনের আর এন ফ্যাশন নামে পোশাক কারখানা ও পাশের শাহ আলমের রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগে। বিকেলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তল্লাশি এখনো চলমান। পাশের যে কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে, সেখানে এখনও আগুন জ্বলছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ওখানে কাউকে যেতে দিচ্ছি না। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে, ড্রোন দিয়ে কার্যক্রম করছি।’
তিনি জানান, পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত তা এখনো জানা যায়নি।
আগুনে নেভানোর চেষ্টার মধ্যে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম ৯ মরদেহ উদ্ধারের কথা জানান। এরপর সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ হয়েছে।